কোরবানির ঈদে ঘরে ঘরে গরু, খাসি ও অন্যান্য পশু কোরবানি দেওয়া হয়। এই ঈদে তুলনামূলক বেশি মাংস খাওয়া হয়ে থাকে। অনেকেরই এই ঈদে অনেক রোগে পড়েন; এমনকি যেসব রোগ থাকে তা মাত্রাতিরিক্ত বাড়িয়ে তোলেন। তার কারণ হলো মাংস খাওয়ার ব্যাপারে সচেতন না হওয়া। তাই মাংস খাওয়ায় একটু সচেতনতা মেনে পবিত্র ঈদকে করে তুলুন আরও আনন্দময়।

করোনারি হৃদরোগ, বিশেষ করে প্রবীণ ব্যক্তি, যাদের ইসকেমিক হৃদরোগ আছে এবং রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা বেশি, তারা তৈলাক্ত মাংস কমিয়ে খাবেন। সারা বছর তাঁরা যে ধরনের নিয়মকানুন পালন করেন খাওয়াদাওয়ার ব্যাপারে-কোরবানির সময়ও এর ব্যতিক্রম না করাই ভালো। কোরবানির মাংস এক দিন বা দুই দিন খেলে যে শরীরের মারাত্মক ক্ষতি হয়ে যাবে তা নয়, তবে চিকিৎসকের তত্ত্বাবধানে যাঁরা রয়েছেন, বিশেষ করে করোনারি হৃদরোগী, ইরিটেবল বাওয়েল সিনড্রোম (আইবিএস) রোগী, ডিসপেপসিয়ায় আক্রান্ত রোগী- তাঁরা অবশ্যই সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করে ঈদের সময় তাঁদের খাওয়াদাওয়ার পরিকল্পনা করবেন। স্থূলকায় শরীর যাঁদের, তাঁরা অবশ্যই ঈদের সময় খাওয়ার ব্যাপারে বিশেষভাবে সতর্ক থাকবেন। নিয়মিত ওজন পরীক্ষা করবেন। খেয়াল রাখবেন, শরীরের স্বাভাবিক ওজন বেড়ে যাচ্ছে কি না।

কোরবানির মাংস সংরক্ষণ করা একটি জরুরি বিষয়। ফ্রিজে সংরক্ষণ করা সম্ভব না হলে সঠিকভাবে মাংস জ্বাল দিয়ে রাখতে হবে।

অর্ধসিদ্ধ মাংস খাওয়া কোনোভাবেই ঠিক নয়। কোরবানির মাংসে জীবাণুর সংক্রমণ হলে মারাত্মক অ্যান্টারাইটিস হতে পারে। এ রোগে পেটের এক ধরনের সংক্রামক, যা খুবই ভয়াবহ। পশুর চর্বি খাওয়া এমনিতেই স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর কোরবানির সময়ও এ বিষয়টি বিশেষভাবে খেয়াল রাখতে হবে। অনেক সময় দেখা যায়, আমরা খাবার সুস্বাদু হবে এমন ভুল ধারণা পোষণ করে কোরবানির মাংসে বেশ কিছু চর্বি আলাদাভাবে যোগ করে থাকি। এটা ঠিক নয়। যতটুকু সম্ভব মাংসের চর্বি অপসারণ করে খাওয়া ভালো। কোরবানি ঈদে ভূরিভোজ আর হঠাৎ বিশ্রামে স্বাস্থ্য-সচেতনেরাও হঠাৎ মুটিয়ে যেতে পারেন। আর যাঁরা উচ্চ রক্তচাপে ভুগছেন, তাঁদের তো কোরবানির ঈদে স্বাস্থ্য-সচেতন থাকা আরও জরুরি।

তাই এ সময়ও সচেতন থাকুন, মেনে চলু স্বাস্থ্যবিধি:

–যারা নিয়মিত ব্যায়াম করে থাকেন, তারা প্রতি সেশনে ব্যায়ামের সময় ১৫ মিনিট বাড়িয়ে দিন। অতিরিক্ত পরিশ্রম শরীরের মেদ ঝরিয়ে ফেলবে।

–ব্যায়ামের অভ্যাস যাদের নেই, তারা আজ থেকেই শুরু করুন না! সকালে ধর্মীয় প্রার্থনা শেষে দ্রুতলয়ে আধঘণ্টা হেঁটে নিন। ঘাম ঝরিয়ে ফুরফুরে হয়ে যান।

–যারা উচ্চ রক্তচাপে ভুগছেন, কোরবানির মাংস খাওয়া থেকে বিরত থাকতে তো বলা যায় না, তবে সচেতন থাকুন। আর অবশ্যই অধিক চর্বিযুক্ত মাংস খাবেন না। সেই সঙ্গে উচ্চ রক্তচাপের ওষুধ নিয়মিত সেবন করতে ভুলবেন না।

–মাংসের সঙ্গে প্রচুর পরিমাণ শীতের সবজি খাবেন, যা আপনার পাকস্থলীকে সাবলীল রাখবে।

–প্রচুর বিশুদ্ধ পানি পান করুন।

আরপি/ এএইচ

তথ্যসূত্রঃ ইন্টারনেট।