বাচ্চাদের কিছু সময়ের স্কুল জীবন অনেক অভিভাবকদের জীবভ অতিষ্ঠ করে তুলেছে। তারা তাদের অফিসের কাজ বা গৃহস্থলির কাজ ছাড়াও বাচ্চাদের স্কুলের হোময়ার্ক করে দেওয়ার দায়িত্ব অনেক অভিভাবকেরাই নিয়ে থাকেন। আজকে আমরা বাচ্চাদের নিজেদের কাজ নিয়ে অভিভাবকদের কি শিক্ষা দেওয়া উচিৎ সে বিষয় আপনাদের সামনে উপস্থাপন করছি।

কিভাবে পিতামাতারা বাচ্চাদের বকাঝকা না করে হোমওয়ার্ক করতে উৎসাহিত করবেন?

কিভাবে পিতামাতারা বাচ্চাদের বকাঝকা না করে হোমওয়ার্ক করতে উৎসাহিত করবেন?

১. বাচ্চাদের শিখতে শিক্ষা দিন

বাচ্চারা প্রথমে বাড়ির কাজ করতে মানা করবেঃ কোথা থেকে শুরু করা উচিৎ? অভিভাবকদের উচিৎ বাচ্চাদেরকে সঠিকভাবে তাদের বাড়ির কাজ করতে শিখানো। তাদেরকে বুঝিয়ে বলতে হবে কেন নির্দিষ্ট কিছু কিছু করার জন্য কাজ করা জরুরী, তাদের পরিণতি এবং নির্দেশনা অনুসরণ করার জন্য পুরষ্কার দেওয়া উচিৎ।

২. তাদের কাজের জায়গাটা সঠিকভাবে সাজান

যেখানে তারা মনোযোগ সহকারে পড়ালেখা করতে পারবে এমন জায়গায় তাদের পড়াশুনার কক্ষটি সাজান। যেখানে পর্যাপ্ত আলো বাতাস রয়েছে এবং সহজেই দরকারি জিনিসগুলো নাগালে পেতে পারে এমন জায়গায় স্থাপন করুন।

৩. আপনার বাচ্চার বাড়ির কাজ করে দিবেন না

পিতামাতারা তাদের বাচ্চাদের স্কুলের পড়াশোনা করার দায়িত্ব গ্রহণ করা উচিৎ নয়। ১২ বছরের পরিবর্তে ৭ বছর বয়সের মধ্যে শেখার অভ্যাস বিকাশ করাটা অনেক সহজ। পিতামাতার ভূমিকা হল পথপ্রদর্শন করা এবং সাপোর্ট করা। কাজটি যদি তাদের কাছে অনেক কঠিন মনে হয়, তাহলে অভিভাবকদের সেটা দেখিয়ে দিতে হয়, তাই বলে এই নয় যে তাদের করে দিতে হবে।

৪. তাদের অগ্রাধিকার সেট করতে শিক্ষা দিন

শেখার প্রক্রিয়া এবং সাধারণ জীবনকে স্বাচ্ছন্দ্য করার জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলি আপনার বাচ্চাকে শেখান। উদাহরণস্বরূপ, হোমওয়ার্ক করার সময় যে বিষয়গুলো গুরুত্বের সাথে লক্ষ্য রাখা উচিৎ তা শেখানঃ

-বাড়ির কাজের ভলিউম, এটা কতটা বোঝা যায় আর কতটা না

-কোন কাযে বেশী সময় লাগে এবং কোন কাজে সময় কম লাগে

-কোন কাজ এজটি শিশু নিজে নিজে করতে পারবে আর কোনটাতে তাদের সাহায্যের দরকার তা জানতে হবে।

৫. বাচ্চাদের সময় সচেতন হতে শিক্ষা দিন

অধিকাংশ সময়ই বাচ্চারা সময় সম্পর্কে সচেতন না-তারা জানে না কত সময় গেছে এবং কতটা বাকি আছে। একটি সাধারণ এলার্ম ঘড়ি এটার সহজ সমাধান হতে পারে। প্রথমে, আপনার বাচ্চা খেতে, কার্টুন দেখতে, বাড়ির কাজ করতে কতটুকু সময় নেয় তা পরিমাপ করার চেষ্টা করুন। তাহলে আপনি সহজেই বাচ্চাদের বলতে পারবেন যে কত সময়ের মধ্যে বাড়ির কাজ শেষ করা লাগবে।

৬. আপনার বাচ্চাকে অনুপ্রাণিত করুন

বাচ্চার প্রচেষ্টার জন্য এবং ভালো রেজাল্টের প্রশংসা করা উচিৎ। প্রাথমিক স্কুল বাচ্চাদের জন্য আপনি একটি মোটিভেশনাল বোর্ড কাজে লাগাতে পারেন। সেখানে কাগজের টুকরায় কাজগুলো (বিছানা ঠিক করা, বাড়ির কাজ করা বা ময়লা ফেলা) লিখে টানিয়ে রাখতে পারেন এবং সপ্তাহের শেষে একটি ভালো পুরষ্কার প্রদান করতে পারেন। এতে তারা কাজ করতে অনুপ্রাণিত হবে।

৭. আপনার বাচ্চাকে কথা বলতে এবং সঠিকভাবে প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করতে শিক্ষা দিন

স্কুল শুরু করে এমন সব শিশু কথা বলতে পারে, কিন্তু তারা সবাই প্রশ্ন করতে পারে না এবং তাদের চিন্তা সঠিকভাবে প্রকাশ করতে পারে না। তাদের মধ্যে অনেকেই লজ্জা পায়, কিভাবে সঠিক উপায়ে করা লাগে তা জানে না। তাই আপনার সন্তানদের তাদের চিন্তাধারা প্রকাশ করতে এবং অনুরোধের সাথে অন্যান্য মানুষের কাছে কিভাবে প্রকাশ করতে হবে তা শেখান।

৮. আপনাদের সম্পর্ক অগ্রাধিকার দেওয়ার সম্পর্ক হওয়া উচিৎ

আপনার সন্তানের একাডেমিক পারফরম্যান্সের উপর আপনার সমস্ত মনোযোগ কেন্দ্রীভূত করবেন না- এটি একমাত্র জিনিস নয় বা আপনার সম্পর্কের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নয়। আপনার সন্তানের জীবন, তাদের শখ, অনুভূতি, পর্যবেক্ষণ, ইচ্ছা এবং বন্ধুদের সম্পর্কে জানতে আগ্রহী থাকুন।

আপনার সন্তানকে নিয়ন্ত্রণকারী ব্যক্তি হিসেবে নয় বরং পরিবর্তে তাদের ভক্ত হন-স্কুলের পরিবেশ সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করুন, তাদের কথা শুনুন এবং তাদের সমর্থন করুন। তাদের সময় বেশি সময় কাটান এবং একটি সিখী এবং আনন্দময় স্মৃতি গড়ে তুলুন।

৯. আপনার বাচ্চাদের তাদের সহপাঠীদের সাথে বন্ধুত্ব গড়ে তুলতে তাদের সহায়তা করুন

সহপাঠীদের সাথে সম্পর্ক গড়ে তোলা সব বাচ্চাদের গুরুত্বপূর্ণ। তাদের আত্মবিশ্বাস এবং প্রাতিষ্ঠানিক পারফরম্যান্স তাদের বন্ধুত্বের সম্পর্কের উপর নির্ভর করে। তাই আপনার বাচ্চাদের তাদের সহপাঠীদের সাথে বন্ধুত্ব গড়ে তুলতে তাদের সহায়তা করুন।

১০. মনে রাখবেন যে, গ্রেড পয়েন্ট একটা শিশুর সফলতা নির্ধারণ করে না 

অধিকাংশ অভিভাবকেরাই তাদের বাচ্চাদের খারাপ গ্রেড পয়েন্ট নিয়ে দুঃশ্চিন্তা করেন। খারাপ রেজাল্ট করা মানে এই নয় যে, বাচ্চাটি মূর্খ, অলস, দায়িত্বহীন এবং কাজ করতে অনিচ্ছুক। তারা শুধুমাত্র এই বিষয়টি নিয়ে কথা বলে যে, কিছু কারণে আপনার সন্তান পড়াশোনা করতে চায় না বাঁ তারা খুব জটিল স্কুল প্রোগ্রামের কারণে এটি করতে পারে না।

#সংগ্রহীত